বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
সানোয়ার হাসান সুনু :: সুনামগঞ্জের কৃষি অধ্যুষিত জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার হাওর গুলোতে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। অগ্রহায়নের শুরুতেই আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হওয়ায় পুরোধমেই নবান্নের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে উঠেছে হাওরাঞ্চলের জেলা হাওরকন্যা সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলার বাতাস। রোগ ও পোকার আক্রমন না থাকায় এ বছর জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনা ঝরা হাসি। উৎপাদন খরচ পুষিয়ে, লাভবান হবেন বলে আশাবাদী কৃষকরা। চারিদিকে এখন ধানের মৌ মৌ গন্ধ। ক্ষেতেপাকা ধান দেখে হাসিতে আত্মহারা প্রতিটি কৃষক পরিবার। আর এই সোনার ধান ঘরে তুলতে ব্যস্তদিন পার করতে হচ্ছে উপজেলার কৃষকদের। চলতি সপ্তাহ থেকে পুরোধমেই ধান কাটা ও মাড়াই দিচ্ছেন কৃষক কৃষাণিরা।
প্রকৃতিতে পুরুধমেই শীতের জয়গান শুরু হয়েছে। তবে শীতের এই তীব্র জয়গান ও নানা প্রতিকুলতা দূর করে সোনার ফসল ঘরে তোলার আমেজে উপজেলা দুটির কৃষকরা। রোববার থেকে পুরোধমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। বিগত বছর গুলোর চেয়ে এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করা যায় লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশি ফসল ঘরে উটবে; এবং বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার লাভের অংকটাও হয়তো বেশি হবে।
রোববার জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার মমিনপুর, হামালুতা হাওর সহ কয়েকটি হাওরে এবার প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ফসল রোপনকরা হয়েছে। বর্তমানে হাওরে পুরোধমে ধান কাটা ও মাড়াই চলছে। আমরা কৃষকদের আমন চাষে উৎসাহিত করায় এবার অনাবাদি জমিগুলোতেও চাষাবাদ করায় কৃষকরা ব্যাপক ভাবে লাভবান হচ্ছেন।
জগন্নাথপুর সদর গ্রামের কৃষক শামীম আহমদ জানান, মমিনপুর হাওরে ৭ কেদার (৩০শতকে ১ কেদার) জমিতে আমন ধান বপন করেছিলাম। আল্লাহর রহমতে ফলন ভাল হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪ কেদার জমির ধান কেটেছি।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। গত ২-৩ বছরের তুলনায় এবার ধানের ভালো ফলন হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে। মাঝে ইদুরের উপদ্রব দেখা দিলে তা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে দমন করা সম্ভব হয়েছে।
সরেজমিনে হাওর ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ আমনের মাঠ।পোকা বা কোনো রোগের আক্রমন নেই। ক্ষেতে ভালো ফসল হওয়ার এবং ফসল পেকে যাওয়ায়,কৃষক পাকা ধান কেটে আঁটি বেঁধে নিয়ে আসছেন। কেউ কেউ মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেক কৃষানিরা আবার কুলা দিয়ে ধান পরিষ্কারের কাজ করছেন।
উপজেলার পাগলা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান কয়েক বছর থেকে আমি ধান চাষ করে আসছি,এ বছরেও আমি ৫ কেদার জমিতে আবাদ করছি। এখন ক্ষেতের অবস্থা অনেক ভালো। প্রথম দিকে কিছুটা পোকামাকড় থাকলেও ফসলের কোন ক্ষতি হয়নি। উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভ হবে।
Leave a Reply